করোনা মহামারির সময় সাইক্লিং এর গুরুত্ব



করোনা ভাইরাসের উপদ্রবে জীবন এখন স্থবির। বাইরে বের হলেই এখন সবার ভেতরে একটা আতঙ্ক কাজ করে। বাঙ্গালীদের মধ্যে খুব একটা সচেতনতা এখনো জন্মায় নি। তাই আমরা যারা সচেতন তারা নিজেদের রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ সুরক্ষার আশ্রয় নিতে হবে। এই অবস্থায় নিয়মিত সাইক্লিং এর গুরুত্ব ঠিক কতোটুকু তা আলোচনা করতেই এই লেখা।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সাইকেল

আমাদের দেশে রাস্তা ঘাটে এতো মানুষ যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দূরুহ ব্যাপার। লোকাল ট্রান্সপোর্টে মানুষের এতো চাপ থাকে যে মাস্ক পড়েও খুব একটা লাভ হয়না। সিএনজি বলেন কিংবা বাস, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোন বালাই নেই আমাদের মাঝে। এই ঝামেলা এড়াতে সাইকেলই হতে পারে সমাধানের পথ।

বাইসাইকেল একক বাহন হওয়ায় আপনাকে কারো সাথে সিট শেয়ার করতে হচ্ছে না। তাই ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনাও খুবই কম। যার ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিশ্চিন্তে আপনি যাতায়াত করতে পারবেন।

তবে সাইকেল চালানোর সময়ও মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করবেন।


পরিবহন স্বল্পতায় বিকল্প মাধ্যম

বর্তমানে কিছু কিছু যায়গায় গাড়ি অন্যান্য সময়ের থেকে কম চলাচল করছে। পরিবহনের চেয়ে মানুষ অনেক বেশি। ফলে যাতায়াতের জন্য সময়মতো গাড়িও পাওয়া যাচ্ছে না। সাইকেল ব্যবহার করলে আপনি "গাড়ি পাবো কি না" এই টেনশন ছাড়া যে কোন সময় যে কোন যায়গায় যেতে পারছেন।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাইক্লিং এর ভূমিকা

এবার আসি সাইক্লিং এর স্বাস্থ্যগত উপকার এর বিষয়ে। শারীরিক ব্যায়াম হিসাবে সাইক্লিং কতোটুকু উপকারী সেটা আমরা কম বেশ সবাই-ই জানি। কিন্তু জানার পরেও আমরা অনেকেই ছোট দূরত্বও রিকসা করে চলে যাই, যেখানে সাইকেলে যাওয়া যেত। আরামপ্রিয় বাঙ্গালী বলে কথা।

তবে এই মুহূর্তে সু-স্বাস্থ্যের দিকে আমাদের নজর দিতেই হবে। গবেষণায় দেখা গেছে শারীরিক পরিশ্রম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। দূর্ভাগ্যবসত করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেলেও আমাদের শরীর যাতে তা থেকে সহজেই সেরে উঠতে পারে এর জন্য আমাদের এখন নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

ব্যস্ততা কিংবা অলসতার কারনে অনেকের ব্যায়াম করা হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে বাইরে বের হলে আমরা যদি সাইকেল ব্যবহার করি তাহলে আমাদের কাজও হলো আবার ব্যায়ামও হয়ে গেলো!

অর্থনৈতিক উপকার

টাকা পয়সার দিক দিয়ে সবারই দিনকাল খারাপ যাচ্ছে এখন। এই সময়ে ডাবল ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করে বিলাসিতারই আরেক নাম। সমাধান? -বাইসাইকেল!

আপনার প্রতিদিনের ভাড়া হিসেব করলে দেখবেন মাস শেষে কয়েক হাজার টাকা খরচ করে ফেলতেসেন শুধুমাত্র ভাড়া দিতে দিতেই! অন্যদিকে কয়েক হাজার টাকার সাইকেলে চড়ে আপনি বছরের পর বছর এক পয়সা খরচ না করেও চলাফেরা করতে পারছেন। হ্যাঁ ভাই তাহলেই আপনি জিতবেন!

তাই শহরের মধ্যে কিংবা কাছাকাছি দূরত্বে যাতায়াতের জন্য সব সময় সাইকেল ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পরিবেশ এর উপকারের কথা না হয় বাদই দিলাম, নিজের স্বার্থের জন্য হলেও বাইসাইকেল চলানো শুরু করেন।

Post a Comment

0 Comments